মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

রজব মাসে আইয়ামে বিজের রোজা রাখবেন যেদিন

নিউজ পায়রা ;
রজব মাসে আইয়ামে বিজের রোজা রাখবেন যেদিন

রামাদানের রোজা ছাড়াও সারা বছর অনেকগুলো নফল রোজা রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম ফজিলতপূর্ণ নফল রোজা হচ্ছে আইয়ামে বীযের রোজা। তবে কেউ যদি প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখে তাহলে সে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। এই তিন দিন চাঁদ অনেক সাদা দেখায় তাই এ দিনগুলোকে আইয়ামে বিজ বা সাদার দিন বলা হয়। নবীজি (সা) সারা বছর এই রোজা রাখতেন। এর থেকে আইয়ামে বীজের ফজিলত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আজকের এই পোস্টে আইয়ামে বীজের রোজা কবে, এর ফজিলত, বিধান ও মাসআলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব ইনশাআল্লাহ।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে আব্দুল্লাহ, তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখবে। কেননা নেক আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকি। এভাবে সারা বছরের রোজা হয়ে যায়।’ (মুসলিম ২৬১৯)

প্রতি চান্দ্র মাসে তিনটি রোজা রাখা মুস্তাহাব। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো এ রোজাগুলো ছাড়তেন না। তিনি সব সময় আইয়ামে বিজের রোজা রাখতেন। এমনকি সফরেও। তবে রোজাগুলো ফজিলতপূর্ণ হলেও তিনি উম্মতের জন্য এ রোজাকে বাধ্যতামূলক করেননি। হাদিসে পাকে এসেছে,

তুমি যদি (প্রতি) মাসে তিনটি রোজা রাখতে চাও, তাহলে তেরো, চৌদ্দ এবং পনেরোতম দিনে রোজা রাখবে। (তিরমিজি, নাসায়ি)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) প্রতিদিন রোজা রাখতেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে প্রতিদিন রোজা রাখতে নিষেধ করেন এবং উপদেশ দেন এভাবে,

‘হে আবদুল্লাহ, আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন রোজা রাখো এবং সারা রাত নামাজ আদায় করে থাক। জবাবে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহর রসুল। নবীজি (স.) বললেন, এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) রোজা রাখো আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) নামাজ আদায় করো আবার ঘুমাও। কেননা তোমার ওপর তোমার শরীরের হক রয়েছে, তোমার চোখের হাক রয়েছে, তোমার ওপর তোমার স্ত্রীর হক আছে, তোমার মেহমানের হক আছে। (বরং) তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখবে। কেননা নেক আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকি। এভাবে সারা বছরের রোজা পালন হয়ে যায়।’ (বুখারি)

হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম বেহেশতের নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার পর তাদের শরীর থেকে জান্নাতি পোশাক চলে যায়। আর তাদের শরীরের রংও কুৎসিত হয়ে যায়। এরপর হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখলে আবার তাদের শরীরের রং পূর্বের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে যায়। তাই এই তিন দিনকে আইয়্যামে বিজ বা উজ্জ্বলতার দিন বলা হয়।

সেই ধারাবাহিকতায় ১৪৪৬ হিজরির রজব মাসের ১৩ তারিখ হবে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি)। কেউ যদি আইয়ামে বিজের রোজা রাখতে চায় তাহলে তাকে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে সেহরি খেতে হবে এবং রোজার নিয়ত করতে হবে। এভাবে মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখলে এই মাসের আইয়ামে বিজের রোজা রাখার ফজিলত অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের ফেসবুক পেজ :