পটুয়াখালীর গলাচিপায় ইমাম মাহদী দাবী করায় ৯ ই এপ্রিল বুধবার গলাচিপা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা আটক করে গলাচিপা এনজেড দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক রুমে আটকিয়ে রাখে মাদ্রাসা শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে ।
পরবর্তীতে স্থানীয় জনগন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আটককৃতকে গলাচিপা থানায় নিয়ে যায় ।
আটককৃত মো.হাবিবুর রহমান(৩৭) কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পশ্চিম শাহপুর গ্রামের মুন্সিবাড়ি এলকার মো.আমানত উল্লাহর ছেলে। সে গলাচিপা উপজেলার বাহের গজালিয়া ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার গনিতের শিক্ষক।
বাহের গজালিয়া ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো.অলিউল্লাহ বাদী হয়ে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানায় গলাচিপা থানায় এজাহার দায়ের করেন।
আরও পড়ুন- পঞ্চগড়ে মুখে কালো কাপড় বেধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ
এই বিষয় মাদ্রাসা সুপার অলিউল্লাহ এজাহারে উল্লেখ করেন, উল্লিখিত বিবাদী আমাকে বলে “আল্লাহর নামে নাম রাখতে নিষেধ করো। আল্লাহর নাম পরিবর্তন করে রাখতে বলো। পর্দার কথা বলো। তুমি কি তোমার মাকে পর্দার কথা বলবে না। আল্লাহর পয়গম্বরদের চরিত্র কেহ যেন অভিনয় না করে। এই ওহি তার নিকট নাযিল হয়”। গত ০৩-০৩-২০১৮ খ্রি. রোজ শনিবার যোহরের নামাজের পর ১৪.০৫ ঘটিকায় সে আল্লাহর কাছে জানতে চায় শবে কদরের রাত কোনটি? উত্তরে আল্লাহ সরাসরি তাকে বলে ২৬ শে রমজান দিবাগত রাত। সে বলে ২০১৮ সালের মার্চ মাসের ১৫ তারিখ ১৫.০০ ঘটিকায় কাজির পুকুর পাড় জামে মসজিদের সামনে দাড়াইয়া উপরে তাকাইয়া আল্লাহর কাছে জানতে চায় আল্লাহ আপনি সমস্ত কিছু কিভাবে দেখেন? তখন আল্লাহ তাকে বলেন একটি স্বচ্ছ কাচের ভিতরে বিত্তাকার গোলাকারের ভিতরে সমস্ত কিছু যেমন দেখা কাঙ্খায় তেমনই সবকিছু আল্লাহ দেখেন। ২০১৭ সালের ৪রা ফেব্রুয়ারী মাগরিবের নামাজের পর নিজ ঘরে আল্লাহ তার কাছে। জানতে চায় সে আল্লাহকে ডাক কেন? তখন সে আল্লাহর কাছে চাইছে আল্লাহ তাকে যেন জান্নাত দান করেন। আল্লাহ তাকে বলে তোমাকে জান্নাত দান করলাম। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়। ০৫-০২-২০১৭ তারিখ বিকাল ১৫.৩০ ঘটিকায় আল্লাহ তাকে বলেছেন সে (তার মা) জাহান্নামী। ঐ দিন ১৬.৪৫ ঘটিকায় তাকে আল্লাহ বলেন তারা দুজন জাহান্নামী (তার মা ও তার চাচী)। ২০২৪ সালের ২১ শে জানুয়ারী সে আল্লাহর নূর দেখতে পায়। সে আল্লাহর কাছে জানতে চায়? “আল্লাহ মাহদী কে? প্রতি উত্তরে আল্লাহ বলেন সেই (আসামী) আল্লাহর মাহদী। এইভাবে সে মানুষের কাছে ইমাম মাহদী হিসেবে পরিচয় দিতে • থাকে। ঐ দিন রাতে তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নাযিল হয় ২০২৪ সালের ৩রা জুন থেকে দুর্ভিক্ষ শুরু হবে”। ২০২৪ সালের এপ্রিলে আল্লাহ তার নিকট বলেছেন তারাও কি আদ সম্প্রদায়ের মত। তারা যদি ক্ষমা পেতে চায় তবে পবিত্র গোসল দিতে হবে। পবিত্র পোষাক পরিধান করবে। আল্লাহু আকবর বলে সিজদায় যাবে। তারা আমার গুনকির্তন করতে পারবে না। তারা শুধু বলবে অস্তাগফিরুল্লাহ”। ঐ তারিখ রসুল (সঃ) তাকে বলেন “তারা যেন আমার সুন্নাতের দাড়ীর উছিলায় আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়। যারা আমার মাযহাব মানবে তারা দাজ্জালের ফিৎনা থেকে মুক্ত”। এই থেকেই সে সকলকে বলে সে রসুলের তরিকায়। এই পর্যন্ত তার নিকট ১০০ (একশত) আয়াত আল্লাহর নিকট থেকে নাযিল হয়েছে। ২০২৫ সালে শুরু থেকে অদ্য পর্যন্ত আর কোন ওহি তার নিকট নাযিল হয় নাই। তার উপর আল্লাহর নিকট থেকে যে ওহি নাযিল হয়েছে সেগুলো আল কুরআন এরই ১১৫ (একশত পনের) নাম্বার সুরার অংশ। অর্থ্যাৎ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর নিকট ১১৪(একশত চৌদ্দ)টি সুরা নাযিল হয়। এর পরের সুরাই তার নিকট নাযিল হয়। এই সুরার নাম আল্লাহ রেখেছেন মাহদীয়া। এইভাবে বিবাদী এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছে নিজেকে ইমাম মাহদী পরিচয় দিয়ে উল্লিখিত বিষয় প্রচার করতে থাকে।
এজাহারে আরও উল্লেখ আছে , অদ্য ইং-০৯-০৪-২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ০৮.০০ ঘটিকার সময় গলাচিপা থানাধীন কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের সামনের মাঠে ১নং সাক্ষী মোঃ তাওহীদুল ইসলাম, ইমাম ও খতিব গলাচিপা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এর নিকট নিজেকে ইমাম মাহদী পরিচয় দিয়ে উপরে উল্লিখিত ঘটনা প্রচার করতে যায়। তখন স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে বিবাদীকে আটক করে, পরে থানায় নিয়ে আসা হয়। ইহাতে প্রতিয়মান হয় বিবাদী প্রতারনার উদ্দেশ্যে অপরের রূপ ধারন করে ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করে ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে উক্ত কথা বলেন। ঘটনার বিষয়ে আমার আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলাপ আলোচনা করিয়া থানায় আসিয়া এজাহার দায়ের করা হয়।
এই বিষয় গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ আশাদুর রহমান পায়রাটিভিকে বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে আসামীকে জেল হাজতে প্রেরন করা হবে।